অ্যালোভেরা বাংলায় যেটি পরিচিত ঘৃতকুমারী হিসেবে। এটি বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদ কিন্তু এর গুণাগুণের শেষ নেই। বিশটি অ্যামিনো অ্যাসিড ও নানান ধরণের ভিটামিন রয়েছে অ্যালোভেরা জেলে। অ্যালোভেরা থেকে জেল সংগ্রহ করে সেটি ব্যবহার করা হয়। ত্বকের দাগ দূর করার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা অনন্য। মুখ এবং ত্বকের দাগ দূর করতে এলোভেরা বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ দুইভাবেই কাজ করে। বাহ্যিকভাবে বলতে ত্বকের উপরিভাগে এর প্রয়োগ বুঝায়। এলোভেরার শাঁস সেবন করাই অভ্যন্তরীণ ব্যবহার। রূপচর্চায় এটির গুণাগুনের শেষ নেই। ত্বক এবং চুলে এর ব্যবহার অতুলনীয়। চলুন জেনে নেয়া যাক রূপচর্চায় অ্যালোভেরার যত ব্যবহার-

ত্বক সতেজ রাখতে অ্যালোভেরার ব্যবহার:
ত্বক সতেজ রাখার জন্য নিয়মিত অ্যালোভেরার প্যাক লাগাতে পারেন। দুই চামচ অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে একটি ডিমের সাদা অংশ এবং এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ভালোভাবে প্যাক তৈরি করুন। পুরো মুখে লাগান, শুকিয়ে এলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুখের ত্বকে প্রতিদিন দুইবার অ্যালোভেরা লাগালে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে ত্বক। গোলাপ জল ও অ্যালোভেরা একসঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগালেও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়বে।

সান বার্ন দূর করতে অ্যালোভেরার ব্যবহার:
রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে এটি ব্যবহার করা হয়। ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল আর অর্ধেক লেবুর রস মিশিয়ে এই মাস্ক সান বার্ন হয়ে যাওয়া ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ব্রণের দাগ দূরতে অ্যালোভেরার ব্যবহার:
ব্রণের দাগ দূর করার জন্য অ্যালোভেরা খুবই কার্যকরী। অ্যালোভেরার রসের সঙ্গে মুলতানি মাটি ও চন্দন পাউডার মিশিয়ে মুখে লাগান। ব্রণের দাগ চলে যাবে।

ত্বকে স্ক্রাব তৈরিতে অ্যালোভেরার ব্যবহার: স্ক্রাব হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে শুষ্ক ত্বকের জন্য এটি খুবই কার্যকর। অ্যালোভেরার সঙ্গে দুধ, মসুর ডালের গুঁড়া, তুলসী পাতা, চন্দন ও গোলাপ পাপড়ি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি দিয়ে ঘষে ঘষে ত্বক পরিষ্কার করুন। মরা কোষ উঠে স্নিগ্ধ হবে ত্বক।

একনে সরাতে অ্যালোভেরার ব্যবহার: অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান একনে সারাতে আর নুতন কোষ জন্মাতে কার্যকর। অ্যালোভেরার জেল আইস কিউব ট্রেতে করে অ্যালোভেরার আইস কিউব তৈরি করে এই কিউব দিনে দু তিনবার আপনার একনেতে ঘষলে একনের সমস্যা কমে যাবে।

চুলের জন্য অ্যালোভেরার ব্যবহার: ত্বকের পাশাপাশি চুলের জন্য অ্যালোভেরা অনেক উপকারী। অ্যালোভেরার ব্যবহারে মাথার ত্বকের পি এইচ ঠিক থাকে আর খুশকিও দূর হয়। এছাড়াও অ্যালোভেরা চুলকে মসৃণতা, উজ্জ্বল এবং স্মুথ করতেও সাহায্য করে।

চুল পড়া থেকে অ্যালোভেরার ব্যবহার: অ্যালোভেরা জেল মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন। ২ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত করলে চুল পড়া বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি নতুন চুল গজাবে। অ্যালোভেরার জেল, টক দই এবং ডিম মিলিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে চুল বাড়বে দ্রুত।

এছাড়াও অ্যালোভেরা ত্বক ও চুলের সৌন্দর্যের চর্চায় বহু ব্যবহৃত হয়। তবে যাদের এলার্জি জনিত সমস্যা রয়েছে তারা অ্যালোভেরা ব্যবহারে বিরত থাকুন ।