গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে ৯ মার্চ দিবাগত রাতে পরীমনি জীবনে এক নতুন যাত্রা দিকে মোর নেয়। কারণ সেদিন ঘটে যায়,যা ভক্তরা কখনো ভাবেনি। অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক হৃদি হকের অফিসে কাজি ডেকে বিয়ে করেন পরীমনি ও পরিচালক কামরুজ্জামান রনি। বিয়ের পর কয়েক দিন স্বামীর সঙ্গে দেখা গেছে। তারপর আর কোনো খবর নেই। বরের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। গণমাধ্যমে বরের প্রসঙ্গ এলে সাফ জানিয়ে দেন, স্বামীর বিষয় যেন না টানা হয়। বিয়ে নিয়ে তিনি কথা বলতে চান না ,অথচ বরের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। তার মানে ‘তিন টাকা দেনমোহরে পর’ পরীর বিয়ে টেকেনি ৫ মাসও। বিয়ে যেনো তার কাছে ছেলে খেলা।

অনিন্দ্য সুন্দরী এই নায়িকার বিয়ে ঘিরে রয়েছে নানা বিতর্ক। বিশেষ করে তার বিয়ে নিয়ে রয়েছে ভক্ত ও মিডিয়াপাড়াতে নানা গুঞ্জন। এইতো গত বছর গেল ১৪ ফেব্রুয়ারি তামিমের সঙ্গে বেশ ঘটা করেই পরীমণির বাগদান সম্পন্ন হয়। কথা ছিল আগামী কোনো এক ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
কিন্তু বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার আগেই বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাদের। বাগদান ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে পরীমনি জানিয়েছিলেন, তিনি একতরফাভাবে কোনো কথা বললে লাভ হবে না। সময়ই সব কিছু বলে দেবে। পরী প্রশ্ন রেখে বলেছেন, সম্পর্ক! সেটাতো তৈরিই হয়নি। ভেঙে গেলো কীভাবে?

তবে তথ্য অনুসন্ধান করে জানা গিয়েছিলো, সাংবাদিক তামিমের সঙ্গে বিয়ের গুঞ্জনের আগেও ২০১৬ সালের শুরুর দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় চিত্রনায়িকা পরীমনির দুইবার বিয়ে হওয়ার ঘটনা। এমনকি সেইসময় বিয়ের ছবি, কাবিননামা ও তালাকনামার ছবিও প্রকাশ পেয়েছিলো সোসিয়াল নেটওয়ার্কের।

২০১৬ সালের ৩১ জানুয়ারি সকালে অনিক আব্রাহাম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে পরীমনির কিছু ছবি শেয়ার করা হয়। সেখানে অনিক দাবি করেছিলেন, পরীমনি তার বন্ধু ইসমাইলের স্ত্রী। তার কিছুদিন পরেই ফেসবুকে পাওয়া যায় পরীমনির কথিত বিয়ের কাবিননামা এবং নতুন কথিত বরের সঙ্গে কিছু ছবি।২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পরীমনি ও সৌরভের কয়েকটি ঘনিষ্ঠ ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল ফেসবুকে। পাওয়া গিয়েছিল বিয়ের কাবিননামার একটি কপিও। এরপরই পরীমনির বিয়ের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরে এটা নিয়ে খবরও প্রকাশ হয় বিভিন্ন মিডিয়ায়। সেসব খবরে সৌরভের সঙ্গে তোলা পরীমনির ছবি ও কাবিননামাও জুড়ে দেয়া হয়।

এই ঘটনায় সে সময় ক্ষেপে গিয়েছিলেন পরীমনি। ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন ফেসবুকে। তিনটি ঘনিষ্ঠ সেলফিও পোস্ট করেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘এমন হাজারটা ছবি আছে আমার সঙ্গে। তবে কি সবাই আমার স্বামী? আজকের কুইজ- বলুনতো আমার পাশের এই ছেলেগুলোর সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক? হাজব্যান্ড রাইট? পিকগুলো সেভ করে রাখেন। এগুলোও একদিন পুরনো হয়ে যাবে, তখন এ রকম নিউজে কাজে দেবে খুব। ’পরীমনির এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় কয়েক গামলা জল ঢেলে দিয়েছিলেন শাকিল রিয়াজ নামে একজন ফেসবুক ইউজার। তিনিও প্রকাশ করেন বেশ কিছু ছবি ও তথ্য। লিখেছিলেন, ‘একটু আগে পরীমনি ভাবীকে নিয়ে একটা পোস্ট দেখলাম, যেখানে ভাবীকে নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর স্ক্যান্ডাল ছড়ানো হয়েছে। আসল সত্য হয়তো অনেকেই জানেন না

‘পরীমনির আসল নাম সামসুর নাহার স্মৃতি। ভাবী আমাদের খুব কাছের বড় ভাইয়ের বৌ। ভাইয়ের নাম ফেরদৌস কবীর সৌরভ। ভাবীকে নিয়ে এসব বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর কারণে আমি আর মুখবুজে থাকতে পারলাম না। আমার মনে হলো এখনই সময়, আসল সত্যটা সবার সামনে তুলে ধরার। ভাই ও ভাবীর বিয়ে হয় ২৮ এপ্রিল ২০১২ সালে। তিন বছর প্রেম করার পরে তারা নিজেদের ইচ্ছায় বিয়ে করেন এবং পরে সেটা দুই পরিবার থেকেই মেনে নেয়। ভাইয়ের বাসা যশোরের কেশবপুরে

শাকিল রিয়াজ আরও লিখেন, ‘ভাই এবং ভাবীর পেশার জগত আলাদা। ভাই পেশায় একজন প্রফেশনাল ফুটবলার। ভাই এবং ভাইয়ের পরিবারের সম্মতিতেই ভাবী মিডিয়া জগতে প্রবেশ করেন। ভাই এবং ভাবীর নিজেদের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে তাদের এ সম্পর্কের কথা আড়াল করে রেখেছেন। তারা এখনও একসঙ্গে বিবাহিত জীবনযাপন করছেন। কিন্তু আজকের এ ঘটনার পরে আমি আর মুখ বুজে থাকতে পারলাম না। আসল সত্য সবার সামনে তুলে ধরলাম। ভাই ও ভাবী আপনারা কিছু মনে করলেও আমি বাধ্য হয়ে এই পোস্টটি করলাম। আমার এই পোস্ট নিয়ে যদি কারও কোনও সন্দেহ থেকে থাকে, তাহলে আমরা প্রমাণ দেয়ার জন্য প্রস্তুত।’
এসব প্রশ্নের উত্তর সাথে নানা কথা জর্জরিত হয়েছিল পরীর বিয়ে নিয়ে। এখন আসল তথ্য একমাত্র পাওয়া যাবে পরীমনির কাছে।