চুল নারীর সৌন্দর্যের একটি অংশ, তাই সুস্থ ও সুন্দর চুল সবায়ই চায়। অনেকেই হয়তো মনে করেন, বাড়িতে চুলের যত্ন নেয়া ঝামেলার কাজ। সময়ের অভাবে অযত্নে থাকা চুলে দেখা দেয় নানা সমস্যা। নিয়মিত যত্ন না নিলে চুল পড়া, খুশকি, চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া. চুলের আগা ফেঁটে যাওয়া সহ দেখা দিতে পারে নানা রকমের সমস্যা। কালো ঘন চুল, সুস্থ ও সুন্দর করতে জেনে নিন চুলের যত্ন ও পরিচর্যার প্রয়োজনীয় টিপসগুলো:

চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করা: চুল ভালো রাখার জন্য ধরন বুঝে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন। চুল তৈলাক্ত, শুষ্ক বা মিশ্র হলে ১০ থেকে ১৫ দিন পরপর চুলে প্যাক লাগান। অবশ্য ধরন বুঝে চুলে প্যাক লাগান, ঘরে তৈরী প্যাক চুলের সুরক্ষায় বেশি কার্যকরী ।

সঠিকভাবে শ্যাম্পু করা: বাইরে বের হলে চুলে প্রচুর ধুলোবালু আর ময়লা চুলে জমে থাকে। তাই, চুল পরিষ্কারের জন্য চুলের ধরন বুঝে ভালো মানের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন । শ্যাম্পু করার সময় ভালো করে মাসাজ করে শ্যাম্পু করুন। চুলে বেশি ময়লা থাকলে দুইবার শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে ৩/৪ দিন ভালো শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করুন।

কন্ডিশনার ব্যবহার করা তবে সঠিকভাবে: চুলের কন্ডিশনার সঠিকভাবে ব্যবহার করা উচিত। কন্ডিশনারের কাজই হলো চুলকে মসৃন রাখা যার মানে হলো চুলের গোড়াতে এর কোনো প্রয়োজনই নেই। তাই কন্ডিশনার ব্যবহার করার সময় তা প্রয়োগ করা উচিত চুলের গোড়া থেকে অন্তত এক ইঞ্চি দূর থেকে। তবে অতিরিক্ত পরিমানে কন্ডিশনার ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকা উচিত নাহলে চুল তৈলাক্ত হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।

অতিরিক্ত হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকা : তাপ চুলকে ভেঙে যেতে সহায়তা করে আর তাই চুলে হিট দেওয়া থেকে বিরত থাকাই উত্তম। অতিরিক্ত হিটের কারণে চুল জ্বলে যেতেও পারে তাই ব্লোয়ার, আয়রন অথবা চুল স্ট্রেটনার যদি ব্যবহার করতেই হয় তাহলে সাবধানতার সাথে তা করা উচিত।

তোয়ালে ব্যবহার করা আলতোভাবে : অনেকেই চুলকে মোছার সময় খুব চাপ প্রয়োগ করে চুল মুছে থাকে এমনকি ঘষে ঘষে মুছে। এতে বারবার ঘর্ষণের ফলে চুল তার সুস্থতা হারিয়ে ফেলে গোড়া থেকে ভেঙে যাওয়ার আশংকায় থাকে। তাই চুল মোছার সময় যতটা সম্ভব আলতোভাবে তোয়ালে ব্যবহার করা উচিত।

ভেজা চুলকে আঁচড়ানো ও চাপ প্রয়োগে বিরত: ভেজা চুল সবথেকে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। ভেজা অবস্থায় থাকাকালীন সময়ে চুলের গোড়া থেকে চুল ভেঙে যাওয়া সবচেয়ে সহজ তাই শ্যাম্পু করার সময় চুলে বেশি চাপ প্রয়োগ করা উচিত নয়। এছাড়াও গোসলের পরপরই চুলে চিরুনি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত।

চুলে তেল ব্যবহার করা: চুলে তেল ব্যবহারে করলে চুলের গোড়া শক্ত হয়। কিন্তু নিয়মিত অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করলে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে যা চুলের জন্য ভালো নয়। তাই নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে তেল ব্যবহার করুন। ভালো মানের নারিকেল তেল চুলের জন্য কার্যকরী।

হট অয়েল মাসাজ করা : চুলের পরিপূর্ণ পুষ্টি যোগাতে অয়েল মাসাজের বিকল্প নেই। আজকাল কোকোনাট অয়েল ছাড়াও বাজারে আমলা অয়েল, আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যায়। চাইলে এগুলো একসাথে মিক্স করেও চুলে লাগাতে পারেন। তবে সঠিকভাবে হট অয়েল মাসাজ করলে চুলে পরিপূর্ণ পুষ্টি পায়।

চুল নিয়মিত আঁচড়ানো বা ব্রাশ করা: চুল নিয়মিত ব্রাশ করা প্রয়োজন। এতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। নিয়ম করে দিনে ২-৩ বার হেয়ার ব্রাশ করা চুলের জন্য উপকারী, রাতে ঘুমানোর আগে চুল ব্রাশ করুন।

ঘুমানোর আগে বেণী করে ঘুমানো: ঘুমানোর আগে বেণী করে ঘুমানো উচিত এতে চুল জোট লাগা বা রুক্ষ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে না। তবে শক্ত করে বেণী না করাই ভালো, শক্ত করে বেণী না করলে চুল একসাথে থাকবে কিন্তু টানটানে থাকবেনা ফলে ভেঙে যাওয়ার সুযোগ কম।

এছাড়া, সুন্দর চুল রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আবশ্যক। আর তাই আপনার চুলের বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন, লোহা এবং প্রোটিন এর মত পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত গ্রহণ করুন। বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় শাক-সবজি চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।