আসছে নতুন বছর ,নতুন ভাবে সব কিছু শুরু করার চিন্তা ভাবনা।কিন্তু এই বছর টা সবার জন্য একটি ঐতিহাসিক বছর বলে আজীবন স্মৃতির পাতায় লেখা থাকবে। ২০২০ পুরোটা সময় কেটেছে করোনা নিয়ে মানসিক দুশ্চিন্তায়। শোবিজ অঙ্গনে সবকিছুতেই পড়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব।
তারপরও আমাদের চলচ্চিত্রে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যেগুলো আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে বছরের বিভিন্ন সময়। সেই ঘটনাগুলো ফের এক নজর দেখে নেয়া যাক:
শাকিবের বিরুদ্ধে দিলরুবা খানের জিডি আলোচনা:
তুমুল শ্রোতাপ্রিয় গান ‘পাগল মন মনরে, মন কেন এত কথা বলে’। গানটি লিখেছেন আহমেদ কায়সারের এবং গানটির সুর করেছেন আশরাফ উদাস। গানটিতে কণ্ঠ দেন সংগীতশিল্পী দিলরুবা খান। গানটি রিমেক হিসেবে ‘পাসওয়ার্ড’ সিনেমায় ব্যবহার করা হয়। প্রযোজনার পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয় করেন শাকিব খান। অনুমতি ছাড়া গান ব্যবহার করার কারণে শাকিব খানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ দায়েরের পর থানায় জিডি করেন সংগীতশিল্পী দিলরুবা খান। এ ঘটনা প্রথম চলচ্চিত্রাঙ্গণে সমালোচনার কঙ্কুর দেয়। চলতি বছরে অপু বিশ্বাসের ট্রাউজারের সঙ্গে মিল রেখে ট্রাউজার পরায় আবারো সমালোচিত হয়েছেন এই নায়ক।
ওয়েব সিরিজের নামে অশ্লীল কনটেন্ট নিয়ে সমালোচনা:
চলতি বছর ওয়েব সিরিজের নামে অশ্লীল কনটেন্ট বহু আলোচিত একটি বিষয়। এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিতর্কের মুখে পড়ে বিঞ্জ। নতুন এই দেশীয় অ্যাপের প্রযোজনায় নির্মিত ওয়েব সিরিজ ওয়াহিদ তারিকের ‘বুমেরাং’, সুমন আনোয়ারের ‘সদরঘাটের টাইগার’ এবং শিহাব শাহীনের ‘আগস্ট ১৪’ বেশ সমালোচিত হয়। এতে বেশ আপত্তিকর দৃশ্য এবং অশ্রাব্য সংলাপ বলতে দেখা গেছে শিল্পীদের, যা দর্শকের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।
জায়েদ খানকে বয়কট ঘোষণা:
করোনাকালের শুরুর তিন মাস রীতিমত সবকিছুর মতই এফডিসির সব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এফডিসির কার্যক্রম শুরুর পরই চলচ্চিত্রের ‘স্বার্থবিরোধী’ কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ কারণে শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠন। এ নিয়ে উত্তাল ছিল চলচ্চিত্র পাড়া। এর কিছুদিন পরেই জায়েদ খানের অভিযোগের ভিত্তিতে ভেঙে দেওয়া হয় চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি।
নারীদের পোশাক নিয়ে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে অনন্ত জলিল:
নারীর পোশাক নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। অনন্ত জলিল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। একজন ভাই হিসেবে বলতে চাই— সিনেমা, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যান্য দেশের মেয়েদের অশ্লীল ড্রেসআপ দেখে নিজেরা তা অনুসরণ করার চেষ্টা করো। আর অশালীন কাপড় পরে বের হও। আল্লাহ তা’আলা তোমাদের যে চেহারা দিয়েছেন, তার দিকে বখাটেরা না তাকিয়ে তখন তোমাদের ফিগারের দিকে তাকায়। আর বিভিন্নভাবে তোমাদের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করে। সেখান থেকে ধর্ষণ করার চিন্তা তাদের মাথায় আসে। আশালীন কাপড় পরে তোমরা নিজেকে কি মর্ডান মনে করো?’
হিরো আলম সমাচার
চলতি বছর হিরো আলমের বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৭ জুন রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় শারমীন আক্তার সাথী নামে এক তরুণী এই অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। এদিকে হিরো আলমের একটি অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়ায় অনন্ত জলিল তার সিনেমা থেকে বাদ দেন হিরো আলমকে। আবার জায়েদ খানকে নিয়ে মন্তব্য করে বিপাকে পরতে হয়েছে হিরো আলমকে। সর্বশেষ কিছুদিন আগে হিরো আলম গান গেয়েও সমালোচিত হয়েছেন। এ বছর ‘সাহসী হিরো আলম’ সিনেমা মুক্তি পায়। এ নিয়েও সমালোচনায় পড়েন তিনি।
জয়কে চিত্রনায়ক মান্নার স্ত্রীর হুঁশিয়ারি
শাহরিয়ার নাজিম জয় অভিনেতা হিসেবে যতটা পরিচিত, তারচেয়ে বেশি পরিচিত সঞ্চালক হিসেবে। সঞ্চালক হিসেবে আলোচনার পাশাপাশি তাকে নিয়ে বেশ সমালোচনাও রয়েছে। জয়ের উপস্থাপনায় ‘জীবনের গল্প’ নামে একটি টিভি অনুষ্ঠানে বিমানের সাবেক ক্যাপ্টেন মোশতাক অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন। এ সময় তাকে এভিয়েশন নিয়ে অনেক প্রশ্ন করেন জয়, পাশাপাশি কেবিন ক্রুদের নিয়ে অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা করেন বলে অভিযোগ করেন প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্নার স্ত্রী শেলী মান্না। এ নিয়ে ফেসবুক স্ট্যাটাসে জয়কে জনসম্মুখে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেন, অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি জানান তিনি। শিল্পীদের অনুষ্ঠানে নিয়ে বিভিন্ন সময় বিব্রত করায় শিল্পী সমিতি থেকেও কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয় জয়কে।
স্বামী হিশাম চিশতির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তমা মির্জা। গত ৫ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানায় তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও হত্যাচেষ্টা করায় মামলা করেন এই অভিনেত্রী। নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার এজাহারে, যৌতুকের জন্য মারপিট করে জখম, ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে বেআইনি প্রবেশ, ছদ্মবেশ ধারণ করে ব্যক্তি ক্ষতিসাধনসহ নানান কারণ তুলে ধরেন তিনি।